২৯ অক্টোবর ২০১৫

খুনের বদলে খুন না অন্য ঘটনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সদরুল


কে এই সদরুল!! ইটাকুমারী ইউনিয়নের মানুষের কাছে আতংকিত নাম। তার বিরুদ্ধে পীরগাছা থানায় হত্যা, নাশকতা, মারপিট, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সহ একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের তালিকায় সে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। যার নিদিষ্ট কোন উপার্জনের পথ ছিলনা। অপকর্মই ছিল তার একমাত্র পেশা। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাড়াও খুন, রাহাজানি, জমি দখল,রাস্তার গাছ কর্তন করে বিক্রয় করা। এলাকার লোকজনকে ভয় ভীতি দেখানো ও জোর পূর্বক অর্থ উপার্জন। টাকার বিনিময়ে এমন কোন কাজ নেই যা তার দ্বারা সম্ভব ছিলনা।

স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় সদরুল দীর্ঘ দিন থেকে তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে রামরাজত্ব কায়েম করে সন্ত্রাসী ষ্টাইলে চলাফেরা করতেন । স্থানীয় ব্যাংক থেকে চাঁদা আদায়, এলাকায় কোনো কাজ হলে ঠিকাদারকে গুনতে হতো মোটা অংকের টাকার নজরানা।

২০০০ সালে এক ঠিকাদারের সাথে তার এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনায় গ্রম্য সালিশ চলাকালে তার বাবা ওই সালিশী বৈঠকে হার্ট এট্রাকে মারা যান। এদিকে আদমের সাথে ইটভাটা ইজারাদার রুজু’র রাজবাড়ির সম্পত্তি নিয়ে ছিল শত্রুতা। এক সময় আধিপত্য নিয়ে সদরুল ও আদম মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে ছিল। এরই জের ধরে আদমের সাথে সদরুলের সখ্যতা গড়ে উঠে আদম ইটাকুমারী এলাকার আর এক ভয়ংকরী সন্ত্রাসী। তাকেও এলাকার লোকজন ভয় করতো। ওই এলাকার আরেক প্রভাবশালী রাজ্জাককের সাথে দেবত্ত্বর সম্পত্তির দখল নিয়ে প্রায় সময় চলতো সংঘর্ষ। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে লেগে ছিল মামলা মোকর্দ্দমা। আদম ওই এলাকার একজন পরিচিত সন্ত্রাসী ও ভাড়াটিয়া খুনি।

ইতোপূর্বে রাজবাড়ির পুকুরের আধিপত্য নিয়ে  রিয়াজুলকে খুন করেন আদম। রিয়াজুল ও খায়রুল হত্যা মামলা সহ দশটি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আসাদুজ্জামান রুুজু একজন ইটভাটা ব্যবসায়ী সে অন্যের ইটভাটা ইজারা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিল। এদিকে সদরুলের বাড়ি ইটভাটার কাছে হওয়ায় তাকে দৈনিক তিনশত টাকা মুজুরিতে রুুজু নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে সদরুুল অংশিদার পরিচয় দিয়ে ইটভাটার কয়েক লাখ টাকা আত্নস্বাদ করে। সদরুল গোপনে ইটভাটাটি দখল করার পাঁয়াতারা করতে থাকে। ফলে ভাটার প্রকৃত মালিক কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর এলাকার কাফি মিয়াকে ভাটায় না আসার জন্য সদরুল তাকে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে অংশিদারদের সাথে ইটভাটার টাকার ভাগা-ভাগী নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে রুজু ও কাফি’র সাথে মাহিগঞ্জ-পাওটানা সড়কের তালতলা নামক স্থানে সদরুলের সাথে কথা কাটা-কাটি এক পর্যায়ে মারপিট হয়। এরই প্রতিশোধ নিতে সদরুল ইটভাটা ইজারাদার রুজুর ছোট ভাই খাইরুলকে খুন করে। এসময় খায়রুলের সাথে থাকা অপর ভাই রাসেলের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে সদরুল ও আদমকে জড়িত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় সদরুল ও আদমসহ অন্যান্যরা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠান। সদরুল খুন হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে জামিনে মুক্তি পায়।

গত ২৩ অক্টোবর শুত্র“বার রাতে কালিগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এমএমবি ইট ভাটার সামনে পৌছা মাত্র পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হন ইটাকুমারী ইউনিয়নের কুখ্যাত সন্ত্রাসী সদরুল ইসলাম। নিহত সদরুল মেম্বার পীরগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা ও ভোট ডাকাতি, নাশকতা সহ বেশ’কটি মামলায় পুলিশের তালিকা ভুক্ত আসামী ছিলেন। এলাকাবাসি বলছে নানান কথা খুনের বদলে খুন না এর পিছনে অন্য কোন হাত আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।

রিপোর্টারঃ কাজী শহীদুল ইসলাম। 

এখানে আপনার বিজ্ঞাপন দিতে ফেসবুকে যোগাযোগ করুন